বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের বাণী, ৯ আগস্ট ২০১৪

এ বছরের বিশ্ব আদিবাসী দিবসটি পালিত হচ্ছে একটি সংকটময় মুহুর্তে, যখন বিশ্ব ২০১৫ সালের মধ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রচেষ্টা, টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং একটি নতুন বৈধ জলবায়ু চুক্তির ভিত্তি গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ।

এসব লক্ষ্যমাত্রার প্রতি আদিবাসীদের গভীর আগ্রহ রয়েছে এবং এক্ষেত্রে তারা একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে। আমাদের অভিন্ন ভবিষ্যত নির্ধারণে তাদের অবদানকে নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

আদিবাসী অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণা আদিবাসীদের বেঁচে থাকা, মর্যাদা, সমৃদ্ধি ও অধিকারের ন্যুনতম মাণ নিশ্চিত করে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে আদিবাসীরা যে পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে তার বাস্তবতা ও এসব আদর্শিক কথার মধ্যে বিস্তর ফাঁক রয়ে গিয়েছে।

যেখানে কিছু দেশ সাংবিধানিক ও আইনী কাঠামো দ্বারা আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিচ্ছে, অনেক দেশ তা করছে না, যা সেসব দেশের আদিবাসীদের জীবন ও ভূমিকে হুমকীর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আদিবাসীদের উপর ঐতিহাসিক অবিচার প্রায়ই তাদেরকে দারিদ্রের পথে ঠেলে দিয়েছে ও বঞ্চিত করেছে। ক্ষমতা কাঠামো বরাবরই আদিবাসীদের জাতিগত আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের পথে বাঁধা সৃষ্টি করে আসছে। তারা সেসব মানুষদের অন্তর্ভুক্ত যারা উন্নতির পথে তুলনামুলক ভাবে উচ্চতর বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। এসব নেতিবাচক দিকগুলো শুধুমাত্র আদিবাসী সম্প্রদায়কেই প্রতিহত করছে না বরং পুরো সমাজের উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

নতুন উন্নয়ন কর্মসূচী সফল করতে হলে আদিবাসীদের অধিকারকে এই কর্মসূচীর একটি অংশ করে নিতে হবে।

সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব আদিবাসী সম্মেলনের প্রাক্কালে, আমি সকল সদস্য রাষ্ট্রর প্রতি আহবান জানাচ্ছি যেন তারা আদিবাসীদের জীবনমাণ ও সুযোগ বৃদ্ধির জন্য, আদিবাসী ও তাদের প্রতিনিধিদের সাথে সম্পুর্ণ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কাজ করে।

আসুন আমরা বিশ্বের সকল আদিবাসীদের মুল্যবান এবং স্বকীয় পরিচয়কে স্বীকৃতি প্রদান ও উদযাপন করি। আসুন তাদেরকে ক্ষমতায়ন ও তাদের আশা-আকাঙ্খার প্রতি সমর্থন প্রদানে আমরা আরও কঠোরভাবে কাজ করি।

এবারের বিশ্ব আদিবাসী দিবসে, আদিবাসীদের অধিকারকে তুলে ধরতে ও রক্ষা করতে আমি  সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যা আমাদের সকলের অভিন্ন ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপুর্ণ।