আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের বানী, ১২ আগস্ট ২০১৪

IYD 2014 bannerজাতিসংঘের একটি নতুন প্রকাশনায় উল্লেখ করা হয়েছে যে বিশ্বের যুব জনগোষ্ঠীর ২০ শতাংশ প্রতিবছর মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির শিকার হয়। কৈশোর থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার ক্রান্তিকালে এই ঝুঁকিটা অনেক প্রকট ভাবে দেখা যায়। অপমান ও লজ্জাবোধ প্রায়ই এই সমস্যাকে জটিল করে দেয়, যা তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রাপ্তি থেকে বিরত রাখে। এ বছর আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘ সেই পর্দা তুলে দিতে সাহায্য করতে চায় যা যুবদের একটি বিচ্ছিন্ন ও নীরব কক্ষে আবদ্ধ করে রেখেছে।

প্রতিবন্ধকতা গুলো সেসব দেশে মারাত্মক হতে পারে যে দেশগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় বিনিয়োগ এর ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। প্রায়শই অবহেলা ও অযৌক্তিক ভয় থেকে মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির শিকার ব্যক্তিদেরকে উন্নয়ন নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড থেকে শুধু দূরেই রাখা হয়না এমনকি মৌলিক সেবা থেকেও এরা বঞ্চিত। এসব কারণে তাদেরকে দারিদ্র, সহিংসতা এবং সামাজিক বর্জন এর ক্ষেত্রে আরও অরক্ষিত করে ফেলে, এবং এতে করে সমগ্র সমাজের উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

যেসব কিশোর যারা ইতোমধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত যেমন, গৃহহীন যুবক, যারা কিশোর সংশোধনী ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে, এতিম ও সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির শিকার, তারা প্রায়ই আরও অপমান ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়, যা তাদের আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয় যখন তাদের সবচেয়ে বেশী সাহায্যের প্রয়োজন। আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রয়োজনীয় সহায়তা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে এসব যুবকরাই নিজেদের বিকশিত করতে পারে এবং আমাদের সমন্বিত ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান অবদান রাখতে পারে।

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা অর্জনের পথে আমাদের হাতে মাত্র ৫০০ দিন সময় রয়েছে। এই ঐতিহাসিক অভিযান সফল করার জন্য যুবকদের অবশ্যই সমর্থন করা উচিত। বিশেষ করে যারা অরক্ষিত।

মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির শিকার যুবকদের সমর্থনে বিনিয়োগের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য  সকল পর্যায়ে বৃহত্তর পরিসরে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালানো জরুরি। অপমানবোধ হ্রাস করন ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আমাদের মনোভাব পরিবর্তনের জন্য বর্ধিত শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মানসিক স্বাস্থ্য হচ্ছে যা আমরা অনুভব করি, এটা হচ্ছে আমাদের আবেগ ও কল্যাণ সাধন। সন্তোষজনক জীবন যাপনের জন্য আমাদের সবাইকে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেয়া প্রয়োজন। আসুন আমরা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সেভাবেই কথা বলা শুরু করি যেমনটা আমরা আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে করে থাকি।

২০১৪ সালের আন্তর্জাতিক যুব দিবস উদযাপনে আসুন আমরা মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির শিকার যুবদের পরিপূর্ণ সম্ভাবনা বাস্তবে পরিণত করতে তাদেরকে সক্ষম করে তুলি এবং তাদের পাশে দারিয়ে বলি “মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”